• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

ইসলামোফোবিয়া মোকাবিলায় ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সিএফএম বৈঠক শুরু

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২০  

ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম নিয়ে ভীতি মোকাবিলায় মুসলমানদের ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে শুরু হয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। এটি ৫৭ জাতির ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিল বা সিএফএম বৈঠকের ৪৭তম অধিবেশন। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) শুরু হওয়া দুই দিনের এই সম্মেলনে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ইসলামোফোবিয়া মোকাবিলার ওপর জোর দেওয়া হবে।

ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকটি উদ্বোধন করেন নাইজারের প্রেসিডেন্ট মাহামাদু ইসোওইফু। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন। দেশটির রাজধানী নাইজারের মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের অধিবেশন।

দুই দিনের অধিবেশনে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন। বিশেষ করে সংস্থাটির সদস্য নয় এমন দেশগুলোতে মুসলিম সংখ্যালঘু ও জনগোষ্ঠীদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। যাতে স্থান পাবে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংকট। তিন বছর আগে এক সেনা অভিযানের মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর সদস্যদের প্রতিবেশী বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে বাস্তুচ্যুত করা হয়।

উদ্বোধনী অধিবেশনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেশটির আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক স্টেট মিনিস্টার রিম বিন্ত ইব্রাহিম সিএমএফের প্রেসিডেন্সি নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম ইয়াকুবুর কাছে হস্তান্তর করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ওআইসির সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি দলের প্রধানরা পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী মুসলিম বিশ্ব সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ইস্যুতে ভাষণ দেবেন। আশা করা হচ্ছে সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকের মধ্যেই পরবর্তী ওআইসি মহাসচিব নির্বাচিত করবেন।

সিএমএফ বৈঠকের অধিবেশন চলাকালে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা করা গাম্বিয়াকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়া মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য ইস্যু যেমন– ফিলিস্তিন সমস্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মীয় অবমাননার বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা।   

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তিনি যেতে পারেননি। নাইজারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার একদিন আগে ঢাকায় তার কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। তার অনুপস্থিতিতে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে যোগ দেবে।      

বাংলাদেশ সিএমএফের এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে আইসিজে’তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার আইনি লড়াইয়ের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেবে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মিয়ানমার সেনা বাহিনীর নির্যাতনে দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে।   

গত বছরের নভেম্বরে ওআইসি, কানাডা ও নেদারল্যান্ডের সমর্থনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজে’তে মামলা করে গাম্বিয়া। আইসিজেতে ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এর প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ জানুয়ারি আইসিজে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে অন্তবর্তীকালীন আদেশ জারি করে।

বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ধনী-গরিব সব দেশেসুষম বণ্টন এবং ওআইসির সদস্য মধ্যপ্রাচ্যের তেল-সমৃদ্ধ দেশগুলোতে কাজ করা বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার প্রসঙ্গে আলোচনা করবে।    

শনিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ওআইসির মহাসচিব ও ৪৭তম সিএফএমের সভাপতি দুই দিনের বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।