• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

‘আব্বু আব্বু’ বলা ২০ সেকেন্ডের কলের সূত্র ধরে ২ শিশুকে উদ্ধার

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২০  

গ্লাস ভাঙার জের ধরে বকা খেয়ে ফরিদপুরের খালার বাড়ি থেকে দাদার বাড়ির উদ্দেশে বের হয় মাহিয়া আক্তার পিংকি (১৩) ও মো. বিপ্লব বেপারী (১০)। কিন্তু পথ ভুলে গিয়ে রাজধানী ঢাকায় চলে আসে তারা। ২০ সেকেন্ডের একটি কলের সূত্র ধরে তদন্ত করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মাথায় তাদের উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল্লাহ হেল বাকী বলেন, এই দুই শিশুর মা গত ১ বছর ৫ মাস ধরে জর্ডানে কাজ করছেন। মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থাকায় তারা খালার বাড়িতে থাকত। কিন্তু গ্লাস ভাঙা নিয়ে খালা বকা দেয়ায় তারা দুই ভাইবোন খালার বাসা থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদরাসা যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দাদার বাড়িতে যাওয়া। কিন্তু পথ হারিয়ে তারা ঢাকা চলে আসে। পরে সম্ভাব্য পাচার হওয়ার আগে রাজধানীর ভাটারা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

Child-1

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন সিআইডির সিনিয়র এএসপি আমিনুল হক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যখন বিষয়টি আসে তখন আমরা তদন্ত করা শুরু করি। এই দুই শিশু রাজধানীর কোনো এক মোবাইল ফোনের দোকান থেকে তাদের বাবাকে ফোন দিয়ে শুধু বলে ‘আব্বু, আব্বু’। কলটির সময় ছিল ২০ সেকেন্ড।’

‘পরে সেই কলের সূত্র ধরে আমরা এই দুই শিশুকে খুঁজতে থাকি। পরে একদিন তাদের রাজধানীর একটি সড়কে বসে কান্না করতে দেখা যায়। তাদের এই অবস্থায় দেখে এক রিকশাচালক তার বাড়িতে নিয়ে যান।’

তিনি বলেন, ‘পরে রিকশাচালক শিশুদের কাছ থেকে তার বাবার নম্বর নিয়ে ফোন দিয়ে জানতে চান, আপনার বাড়ি কি ফরিদপুর? এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন এবং বন্ধ করে ফেলেন। কলের এই বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে আমরা তদন্ত শুরু করি। পরে টানা ৪৮ ঘণ্টা রিকশাচালকের ফোন নম্বরটির কল ট্রেস করে ভাটারা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।’

‘আমাদের ধারণা, ওই রিকশাচালক প্রথমে মানবিক কারণে শিশু দুটিকে তার বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু পরে তার মনে হয়তো তাদের পাচার করার চিন্তা আসে। সেজন্য তিনি তার নিজের ফোন বন্ধ করে ফেলেন। আর সম্ভাব্য পাচারের আগেই আমরা তাদের উদ্ধার করি। তবে এখনো কাউকে আমরা আটক করিনি’-যোগ করেন এএসপি আমিনুল হক।

তিনি বলেন, আমরা এই ঘটনার তদন্ত করছি। পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।