• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

আটক বাঙালিদের ফেরত আনতে বঙ্গবন্ধুর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২১  

পাকিস্তান থেকে প্রস্তাবিত ১৫ হাজার বাঙালির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য জাতিসংঘের উদ্যোগে নিরপেক্ষ জাহাজের বন্দোবস্ত করতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাহাজগুলোতে জাতিসংঘের পতাকা থাকলে ভালো হয় বলেও তিনি জানান।

১৯৭২ সালের ২০ নভেম্বর পাকিস্তান সরকারের কাছে পেশকৃত বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রস্তাবের জবাবে সুইস সরকার মারফত পাকিস্তান বাংলাদেশকে জানিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা করা হলে তারা ১৫ হাজার বাঙালিকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ সরকার সুইস সরকারের প্রস্তাব গ্রহণ করার কথা পাকিস্তানকে জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্বলিত বাণীটি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে হস্তান্তর করেন। ১৯৭৩ সালের এইদিন নিউইয়র্ক থেকে এনা ও বাসস পরিবেশিত খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

৯ এপ্রিল সংবাদপত্রে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিপুল অংশ করাচিতে অবস্থান করছেন বলে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য করাচি-চট্টগ্রাম সমুদ্রপথ ব্যবহার করা যুক্তিসঙ্গত ও খরচের দিক থেকে সুবিধাজনক হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের উদ্যোগে নিরপেক্ষ জাহাজের বন্দোবস্ত করা হলে সেই জাহাজগুলো চট্টগ্রাম থেকে করাচি যাওয়ার সময় বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজার পাকিস্তানিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

বঙ্গবন্ধুর বার্তায় যা ছিল

২৯ মার্চ লেখা প্রধানমন্ত্রীর বাণীতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের সময় জরুরি ভিত্তিতে মোকাবিলা করার মতো মানবিক সমস্যাবলীর প্রতি এবং সেগুলো সমাধানে অগ্রসর হওয়ার জন্য বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশের বক্তব্যটি আবার তুলে ধরে বলা হয়েছিল যে, কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই অবিলম্বে পাকিস্তান থেকে সমস্ত বাঙালি এবং বাংলাদেশ থেকে সমস্ত পাকিস্তানিকে যার যার দেশে ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশ এখনও এই মত পোষণ করে যে এ প্রস্তাব মেনে নেওয়া হলে উপমহাদেশে সমস্ত অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। নিউইয়র্ক থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগকে জাতিসংঘ মহলে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং মহাসচিব তা একান্ত সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছেন।

বাংলাদেশের জন্য মার্কিন সাহায্য

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশের জনগণের জন্য জাতিসংঘের দুটি সংস্থাকে ৪৭ হাজার টন খাদ্য দিয়েছে। জাতিসংঘের মাধ্যমে পরিচালিত একটি মার্কিন সাহায্য কর্মসূচি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৩০ লাখ শিশুকে স্কুলে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য দেওয়া হবে। প্রাথমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এই খাদ্য বিতরণ করবে তারা।

১৯৭৩ সালের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ত্রাণ ও পুনর্বাসন অর্থ সংস্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যক্রম আয়োজন করেছে, যেখানে ২৫ লক্ষ ডলার প্রদান করা হবে।

মোনায়েমী প্রশাসন দিয়ে মুজিবের বাংলা গড়া যাবে না

মোনায়েম আমলের মাধ্যমে একটি দেশকে উপনিবেশ করা যায়, শোষণ অব্যাহত রাখা যায়। কিন্তু ওটা দিয়ে মুজিবের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। মধ্যবর্তী প্রশাসনযন্ত্র বঙ্গবন্ধু ও জনগণের মধ্যে বেড়াজাল সৃষ্টি করছে। এই দিন সন্ধ্যায় আহসানউল্লাহ ছাত্র সংসদ আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলন ও নবীনবরণ উৎসবে ভাষণ দেওয়ার সময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন জনগণের সমস্যা আমলারা বঙ্গবন্ধুর গোচরীভূত করেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, পেট্রোল পাম্প থেকে গাড়ি ফেরত আসা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জানতেই পারেননি যে দেশে তেলের সঙ্কট দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যা যারা সৃষ্টি করছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।