• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

আইন সংশোধন: পিপিপিতে বছরে একটি সভা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৯  


বছরে ছয়টির পরিবর্তে বোর্ড অব গভর্নরস-এর একটি সভা অনুষ্ঠানের প্রস্তাব রেখে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়াও চুক্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য আলাদা বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জনগণের জীবনমান উন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মধ্য দিয়ে বেসরকারিখাতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫’ তথা ‘পিপিপি আইন’ প্রণয়ন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পিপিপি আইনের বাস্তবায়ন পর্যায়ে লব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে আইনে কতিপয় সংশোধন আবশ্যক হওয়ায় এটি সংশোধন করা হয়েছে।

‘এরমধ্যে, বোর্ড অব গভর্নরস-এর সভা বছরে অন্তত ছয়টি অনুষ্ঠিত হবে বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। বছরে ছয়টি সভা আয়োজন সময়সাপেক্ষ এবং সভাপতিসহ সদস্যদের সার্বক্ষণিক ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত আইনে বোর্ড অব গভর্নরস-এর সভার সংখ্যা বছরে ছয়টির স্থলে একটি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

পিপিপি কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরস-এর প্রথম সভায় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বোর্ড গঠন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাহী বোর্ডের গঠন, দায়িত্ব ও সভা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়াদি বিদ্যমান আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

পিপিপি আইনে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলিতে পিপিপি সম্পর্কিত নীতিমালা/প্রবিধি/নির্দেশনা/গাইডলাইন প্রণয়ন, অনুমোদন, গেজেটে প্রকাশ ও জারিকরণের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এখন নীতিমালা/প্রবিধি/নির্দেশনা ও গাইডলাইনের সঙ্গে ‘কার্যপ্রণালী’ শব্দটি সংযুক্ত করা হয়েছে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের সাংগঠনিক কাঠামোতে কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধান রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিদ্যমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সরাসরি নিয়োগ করা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হবে বলে উল্লেখ রয়েছে। 

কর্তৃপক্ষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আলাদা বিধানাবলি সংযোজনের ধারা সংশোধন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বোর্ড অব গভর্নরস অনুমোদিত গাইডলাইন বা বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, পিপিপি আইনে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ যে সব ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সহায়তা ও মতামত গ্রহণ করবে তা উল্লেখ আছে। পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে চুক্তি স্বাক্ষর পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ ও চুক্তি সংশোধনের ক্ষেত্রে সহায়তার বিষয় উল্লেখ আছে। তবে অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায় যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর তা বাস্তবায়ন ও সেবা কার্যক্রম পরিবীক্ষণ পর্যায়েও পিপিপি কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রয়োজন হয়, বিদ্যমান আইনে যার উল্লেখ নেই। এ কারণে বিদ্যমান আইনে অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের পর চুক্তির আওতাধীন কার্যক্রমের পরিবীক্ষণ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পিপিপি কর্তৃপক্ষের মতামত ও সহায়তা গ্রহণের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

‘পিপিপি আইন, ২০১৫’ জি-টু-জি প্রকল্পের বিষয়ে কোনো বিধান ছিল না। কিন্তু ‘পিপিপি আইন, ২০১৫’ প্রবর্তিত হওয়ার পর সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে পিপিপি প্রকল্প (জি-টু-জি পিপিপি) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে ‘পলিসি ফর ইমপ্লিমেন্টিং পিপিপি প্রজেক্টস থ্রু গভর্নমেন্ট টু গর্ভমেন্ট (জি-টু-জি) পার্টনারশিপ, ২০১৭’ এর আওতায় জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও দুবাইয়ের সঙ্গে সমঝোতা/সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

অন্য দেশও এই প্রক্রিয়ায় প্রকল্প গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের জি-টু-জি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনে তিনটি উপ-ধারা সংযোজন করা হয়েছে।

পিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সেবার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থার সার্বিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। এ কারণে পিপিপি চুক্তি সম্পাদনের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প বাস্তবায়নে বেসরকারি অংশীদারকে সহায়তা দেওয়ার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে।