• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

পর্যটকদের অপেক্ষায় রাংপানি

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৩  

পাহাড়, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান যেন সিলেটকে ঢেকে রেখেছে সবুজ চাদরে। সেখানে পর্যটকরা মুগ্ধ হন, প্রেমে পড়েন পাহাড়-ঝর্ণা আর সাদা পাথরের মিতালির। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এমনই একটি জায়গার নাম রাংপানি। এর অবস্থান সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকায়। জেলার বাইরের পর্যটকদের কাছে খুব বেশি পরিচিত নয় স্থানটি। তবে এর মোহনীয় রূপ একবার দেখলে যেন আর ভুলবার সাধ্য নেই কারও।

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে এই জায়গাটি। সেখানে যেতে হলে ব্যক্তিগত যানবাহন কিংবা জাফলং যাওয়ার বাসে উঠে পড়লেই হবে। জৈন্তাপুর শ্রীপুর পর্যটনকেন্দ্র পার হয়ে মোকামপুঞ্জি এলাকায় নামলেই পায়ে হেঁটে মাত্র আধা কিলোমিটার এগোলেই দেখা মিলবে স্থানটির। স্থানীয়দের মতে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা এই জায়গাটি হতে পারে নতুন এক পর্যটনের অপার সম্ভাবনা।

খাসিয়া জমিদারপুত্র জয়দেব বলেন, আমরা ছোট থাকতে দেখতাম এখানে বাংলা চলচ্চিত্রের গানের দৃশ্যধারণ হত। কিন্তু তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ ছিল। কিন্তু এটি নিয়ে কোনও প্রচারণা না থাকায় সুন্দর এই জায়গাটি লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিল। তাই আমরা চাই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জায়গাটি সম্পর্কে প্রচারণা চালানো হোক।

তিনি আরও বলেন, আশি-নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একাধিক ছবির শুটিং হয়েছে নয়নাভিরাম নদী ও এর আপশাশে।

syl ranpane 2

জাফলং জোন ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রতন শেখ জানান, স্থানীয় খাসিয়া আধিবাসীদের দিয়ে একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটি থেকে ঈদকে সামনে রেখে গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়। যে কোনও পর্যটক এখানে আসলে মোকামপুঞ্জি প্রবেশ মুখ থেকে পাঁচশ টাকার বিনিময়ে গাইড নিয়ে যেতে পারছেন। সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশের নিরাপত্তাও রয়েছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকরা যাতে কোনও ধরনের হয়রানির শিকার না হন সেজন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সিলেটের রাংপানি যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ খাসিয়া আধিবাসীদের পুঞ্জির (আবাসিক) ভেতর দিয়ে। সে ক্ষেত্রে তারা যাতে পর্যটকদের সহযোগিতা করেন সেজন্য কথা বলা হয়েছে। 

syl pic ranpane 3

তিনি বলেন, এখানে পর্যটক আসলে মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তাই সবাইকে পর্যটকবান্ধব হবার আহ্বান জানান তিনি।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ এর সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদী বলেন, রাংপানির বুক থেকে পাথর তোলা বন্ধ থাকায় আবারও ধীরে ধীরে নিজের সেই পুরোনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে শ্রীপুরের রাংপানি। পর্যটকদের নিরাপত্তা আর পরিবেশ-প্রতিবেশ ঠিক রেখে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনায় করলে শ্রীপুরের রাংপানি হয়ে উঠবে আরও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। সৌন্দর্যের রং ছড়াবে পর্যটকদের মনে।