• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ফাইনালে

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

ভারতের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে খেলতে এসে কমলাপুর স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচটা খেলে ফেলল ভারত। নেপালের কাছে অপ্রত্যাশিত হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হলো। নেপালের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার কোনো চিন্তাই করেনি ভারত। টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবে, এমন স্বপ্নের ডালা সাজিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল। তাদের শক্তিরও কমতি ছিল না। অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে খেলা ১০-১২ জন ফুটবলার নিয়ে ঢাকায় এসেছিল ভারত। সেই ভারত এভাবে বিদায় নেবে কল্পনার বাইরে।

গতকাল বিকালে ভারত ৩-১ গোলে নেপালের কাছে হেরে গেলে তাদের ভাগ্য চলে যায় বাংলাদেশে কাছে। বাংলাদেশ যদি ভুটানের কাছে হেরে যায় তাহলে ভারতের ফাইনালে যাওয়া সম্ভব ছিল। আর ফাইনালে যেতে বাংলাদেশের দরকার ছিল নিদেন পক্ষে ড্র। সন্ধ্যায় ফ্লাড লাইটের উজ্জ্বলতায় বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচটা সব আকর্ষণ কেড়ে নেয়। বাংলাদেশ ৫-০ গোলে ভুটানকে উড়িয়ে দিল। আর সেই জয়ের ছবি দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিল ভারতীয় ফুটবলাররা। দম ছাড়লেন এক রাজ্যের হতাশা নিয়ে। বয়সভিত্তিক ফুটবলে দুইবার ফাইনাল খেলা ভারত বিদায় নিল। তিন ম্যাচে দুই জয় এক ড্রয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। আগামীকাল ফাইনালে বাংলাদেশ নেপাল মুখোমুখি হবে।

ভুটান প্রথম দুই ম্যাচে ১৬ গোল হজম করেছে। ভারতের কাছে ১২ গোলে এবং নেপালের বিপক্ষে ৪ গোলে হেরেছে। এই টুর্নামেন্টে কাল শেষ ম্যাচে জিতলেও কোনো লাভ হতো না। জিতলে অন্তত একটা কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারত।

ভারতের বিপক্ষে হারের ব্যবধানটা এবার কম হলেও বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছেও ভুটান উড়েই গেল। রানিং স্পিড কোনো দিক থেকে সমান তালে লড়াই করতে পারেনি। সেই সুযোগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শামসুন নাহার হ্যাটট্রিক করলেন। আকলিমা খাতুন করলেন জোড়া গোল।

ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশে দুই পরিবর্তন এনেছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। আইরিন খাতুন এবং উন্নতি খাতুনকে একাদশে নামিয়েছিলেন। তারপরও ভুটানের গোল মুখ খুলতে সময় লেগে যায় ২২ মিনিট। এর আগ পর্যন্ত তিনবার গোলের সুযোগ নষ্ট করেন খেলোয়াড়রা। শামসুন নাহারের ক্রসের বল নিয়ে আকলিমা ভুটানের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করেন ১-০। ২৩ মিনিটে ভুটানের তাশিওয়াংমো ফাউল করেন। পেনালটি পায় বাংলাদেশ। ভুটানের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানায়। ফাউল হয়েছে বাইরে, শামসুন নাহার পড়ে গিয়েছেন বক্সের ভেতরে। ভারতীয় রেফারি কসুম মানডি কোনো কথাই শোনেননি। বল স্পটে বসান। রিপা পেনালটিতে গোল করতে পারেননি। শট বাইরে যায়। খুশিতে নেচে ওঠেন ভুটানের খেলোয়াড়রা। কিন্তু কে জানত আরো বিপদ রয়েছে তাদের ভাগ্যে। ৩০ মিনিটে উন্নতি খাতুনের কর্নারের বল হেড করে গোল করেন শামসুন নাহার ২-০।

বিরতির পর গোলের জন্য আরো মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলার নারী ফুটবলাররা। ঝুঁকি নেয়নি। জয় নিশ্চিত করতে আক্রমণে ঝাঁপায়। ৫৩ মিনিটে আবার রিপার কাছ থেকে বল নিয়ে শামসুন নাহার দ্বিতীয় গোল করেন, ৩-০। ৫৬ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন শামসুন নাহার। ভুটানিজ গোলকিপার সোনাম পেলডেনকে একা পেয়ে মাথার ওপর দিয়ে বল বাইরে পাঠান। ৬০ মিনিটে আকলিমা নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৪-০। এক মিনিট ব্যবধানে অনেক অপেক্ষার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে অধিনায়ক শামসুন নাহার করেন ৫-০। এরপরই কোচ ছোটন বাংলাদেশের গোলকিপার রূপনা চাকমাকে তুলে নিয়ে গোলকিপার সাথী বিশ্বাসকে গোল পোস্টের দায়িত্ব দেন। গতকালকের দুই ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়া-তুরস্কে ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।