• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

‘ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি ভাবতেও অবাক লাগছে’

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২২  

এস এম সিফাত উল্লাহ ও মুস্তাকিম হোসেনের কাছে এখনও ভাবতে অবাক লাগছে। বিশ্বাসই যেন হতে চাইছে না! ভারতের আসামে ব্যাডমিন্টন সাউথ এশিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৫ বিভাগে দ্বৈত ইভেন্টের শিরোপা জিতেছেন লাল-সবুজের দুই প্রতিনিধি। তাও আবার শক্তিশালী ভারতের দুই শাটলারকে হারিয়ে। তাই তাদের আনন্দ যে এখন বল্গাহীন। কিশোর বয়সে অনন্য কীর্তি গড়ার পথে এস এম সিফাত উল্লাহ ও মুস্তাকিম হোসেন ফাইনালে স্বাগতিকদের অভিনব গার্গ ও প্রতীক কুন্দিলিয়া জুটিকে হারিয়েছেন ২-১ সেট ব্যবধানে। আসামে এমন সাফল্য পেয়ে আনন্দে অভিভূত দুজনই। সিলেট সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন সুখস্মৃতি নিয়ে। এখানেই থেমে যেতে চাইছেন না দুজনের কেউই। তাদের চোখে এখন বড় স্বপ্ন।

এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ছাড়াও স্বাগতিক ভারত, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা অংশ নিয়েছে। ফাইনালে জিততে বাংলাদেশকে শুধু ভারত নয়, হারাতে হয়েছে নেপাল ও ভুটানের শাটলারদেরও। সিলেট সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরার সময় ফোনে ‘ধরা হলো’ লাল-সবুজ দলের দুই শাটলারকে।

ফোনের অন্য প্রান্তে যেন খুশির ফোয়ারা। সিফাত উল্লাহ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে। বলছিলেন, ‘ভারত ব্যাডমিন্টনে অনেক এগিয়ে। ওরা সবাই জাতীয় দলে খেলে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলনে আছে। বিদেশি কোচও আছে ওদের। আর আমরা তো সেভাবে কোনও সুবিধাদি পাই না। এমন পরিস্থিতিতেও ওদের আমরা হারিয়েছি। এটা আমাদের কাছে অনেক বড় অর্জন।’

ফাইনালে প্রথম সেটে জিতলেও পরেরটিতে হার দেখতে হয়েছে। তবে তৃতীয় সেটে স্বাগতিক জুটিকে দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশের দুজন। এমনিতে সিঙ্গেলসে ওদের কাছে হারতে হয়েছিল। সেমিফাইনালে হেরে গিয়ে ভীষণ মন খারাপ ছিল। তবে দ্বৈতে এসে পণ করেছিলেন, যে করেই হোক শিরোপা জিততে হবে। শেষ পর্যন্ত পণে অটুট ছিলেন দুজনই।

ব্যাডমিন্টন

সিফাত উল্লাহ যেমন বলেছেন, ‘প্রথম সেট জয় তারপর হার এরপর জিদ চেপে যায়। যে করেই হোক জিততে হবে। তাই শেষ পর্যন্ত আমরা নিজেদের খেলাটা খেলে গেছি। মনের জোর দিয়ে খেলেছি। অনেক পরিশ্রম করে খেলেছি। তাতেই সাফল্য এসেছে।’

বাংলাদেশে ব্যাডমিন্টনে লিগ হয় না অনেক দিন হলো। খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদে ট্রেনিংও চিন্তা করা যায় না। সেখানে ভারতের শাটলারদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কম চাট্টিখানি কথা নয়। সিফাতের তাই আকুতি, ‘আমাদের যদি বিদেশি কোচ থাকতো। অনুশীলনের মধ্যে থাকা যেতো। লিগসহ ঘরোয়া সবকিছু নিয়মিত হতো তাহলে আমরাও অনেক এগিয়ে যেতে পারতাম। দেখা যায় আমাদের খ্যাপ খেলেই নিজেদের ফিট রাখতে হয়। যা আসলে ঠিক নয়। আমাদের দিকে সবাই যদি দৃষ্টি দেয় তাহলে সামনের দিকে আরও ভালো ফল হবে।’

একই গাড়িতে ছিলেন মুস্তাকিমও। সিফাত চট্টগ্রামের, মুস্তাকিম দিনাজপুরের; দুজনেই দশম শ্রেণির ছাত্র। সিফাতের পাশ থেকে মুস্তাকিমও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমরাও ভাবিনি চ্যাম্পিয়ন হবো। মনের জোরে খেলেছি সর্বোচ্চটা দিয়ে। আমরা ফাইনাল জেতায় ওরা (স্বাগতিকরা) অবাক হয়েছে। আমরা যতটুকু জানি, বাংলাদেশ থেকে আগে এমন ফল হয়নি। এই ধারা ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’

সিফাত-মুস্তাকিমের স্বপ্ন এখন আরও প্রসারিত।