• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

তিন মাসেই ভাঙনে বিএনপি মিত্র ১২ দলীয় জোট

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩  

আত্মপ্রকাশের মাত্র তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র ১২ দলীয় জোটের মধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ জোটের শরিক দল ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি যুগপতের কর্মসূচি প্রতিবাদ সমাবেশ করতে জোটে যোগ দেয়নি। তারা পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করেছে।

লেবার পার্টি রাজধানীর পুরানা পল্টন মসজিদ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে তাদের মিছিলটি পল্টন মোড়, তোপখানা রোড, বিজয়নগর, নাইটেংগেল মোড় হয়ে টেপা কমপ্লেক্স গিয়ে শেষ হয়।

অন্যদিকে ১২ দলীয় জোটের প্রতিবাদ সমাবেশ রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির পেছনের সড়কে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, লেবার পার্টিকে ১২ দলীয় জোট থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এ দলের বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে জোটের অন্য নেতারা।

জোটের নিজস্ব বৈঠক কিংবা বিএনপির সঙ্গে জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে জামায়াতের পক্ষে অবস্থান নিয়ে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. ইরান বক্তব্য রাখেন। যা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বলে জানা গেছে। ।

এ ব্যাপারে লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘আমাদের বাদ দেওয়ার কিছু নেই। এর আগেই আমি সরে এসেছি। আমরা আজকে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেছি।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির নির্দেশনা অনুযায়ী যার যার অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন করব। আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি, থাকব।

এ ব্যাপারে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের একটি দল আজ জোটের প্রোগ্রামে আসেননি। কেন তারা আসেনি আমরা জানি না। তবে এ নিয়ে জোটের আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত বছরের ২২ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১২ দলীয় জোটের আত্মপ্রকাশ হয়। ১২ দলীয় এই জোটে রয়েছে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, আবদুল করিম আব্বাস ও শাহাদাত হোসেন সেলিমের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে এনডিপি, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট, তাসমিয়া প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের এই শরিক দলগুলো যুগপৎ আন্দোলন বেগবান করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১২টি জোট গঠন করে। এক দশক আগে ২০১২ সালে ২০ দলীয় জোট গঠন করা হয়। সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের গতি ও ব্যাপ্তি বাড়াতে ২০ দলীয় জোট কার্যত ভেঙে দিয়েছে বিএনপি।

১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশের আগের দিন এক অনানুষ্ঠানিক সভায় শরিকদের ডেকে বলে দেওয়া হয়, এখন থেকে কেউ যেন ২০ দলীয় জোটের নাম ব্যবহার না করে। এখন যুগপৎ আন্দোলনে সব দল অংশ নিতে পারবে। এবার ১২ দলীয় জোটের বাইরে এর শরিক দল লেবার পার্টি পৃথক সমাবেশ করল।

এদিকে দুপুরে যুগপৎ আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির পেছনে সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।

জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে ও আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, নন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাসানীর এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ এলডিপির তমিজউদ্দিন টিটু, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জাগপার আসাদুর রহমান সহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যা দরকার তা মেনে নিতে হবে। কিন্তু এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে রায় অমান্য করেছে। রায়ে বলা হয়েছিল আরও দুটি জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই সরকার সেই রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তা বাতিল করেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করা বাতুলতা মাত্র। তবে এই সরকার নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি মানতে বাধ্য হবে। আমরা বলবো- বাংলাদেশ ও জনগণের স্বার্থে অতিদ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলেন, আর নিরপেক্ষ সরকার বলেন যে নামেই হোক তা গঠন করুন।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘কদিন পরই রমজান মাস শুরু হচ্ছে। অবিলম্বে বাজারের পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। না হলে মানুষের কষ্ট হলে সেই অভিশাপে আপনার জ্বলে যাবেন। আমরা জরুরিভিত্তিতে বাজারের পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে দাবি জানাই। প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যত লাগে ডলার খরচ করুন। পারলে বিনামূল্যে ইফতার সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’