• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

শিবচরে ইসমাইল হত্যায় জড়িত আরেক নারীকে গ্রেফতার

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২১  

শিবচর প্রতিনিধি: মাদারীপুর জেলার শিবচরে বিসিএস পরীক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন ইমন হত্যায় জড়িত সাজেদা মারিয়া(২০) নামের আরেক নারীকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় শরিয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পাইনপাড়া মাঝিকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে মারিয়াকে গ্রেফতার করে মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। ত্রিভূজ প্রেম এবং গোপন ভিডিওর কারণেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃত সাজেদা মারিয়া হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত লাবনীর নতুন প্রেমিক কামরুজ্জামান কামরুলের আরেক প্রেমিকা বলেও জানিয়েছে পুলিশ। সে সানজিদা, তানজিলা নামেও নিজের পরিচয় দিয়ে থাকেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,‘ঈদের দ্বিতীয় দিন গত ১৫ মে শিবচরের সন্যাসীরচর এলাকার চরবাঁচামারা আড়িয়াল খাঁ নদে ইসমাইল হোসেন ইমনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঈদের দিন দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে সে নিখোঁজ হয়। লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বড়ভাই শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ হত্যাকান্ডে জড়িত ইসমাইল হোসেন ইমনের প্রেমিকা লাবনী আক্তার, লাবনীর নতুন প্রেমিক কামরুজ্জামান কামরুল, কামরুলের আরেক কথিত প্রেমিকা সাজেদা মারিয়া ও তাদের সহযোগী মেহেদী ফরাজীর সংশ্লিষ্টতার প্রমান পায়। পরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও উপজেলার দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একটি দল গত সপ্তাহের মঙ্গলবার(২৫ মে) প্রেমিকা লাবনী আক্তার ও তার সহযোগি মেহেদী ফরাজীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারের পর লাবনী হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। এর পর ডিবি পুলিশের একটি দল শনিবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পাইনপাড়া মাঝিকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে হত্যাকান্ডে জড়িত কামরুজ্জামানের কথিত প্রেমিকা সাজেদা মারিয়াকে (২০) গ্রেফতার করে। আসামীকে গ্রেফতারের পর আদালতে তুলে ৭ দিনের রিমান্ড দাবী করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সাজেদা মারিয়া শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পাইনপাড়া মাঝিকান্দি গ্রামের শাজাহান শেখের মেয়ে।

মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন বলেন,‘আমরা তদন্তে হত্যাকান্ডে জড়িত ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাই। ইমনের প্রেমিকা লাবনী ও তার এক সহযোগী মেহেদীকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।  তাদের দেওয়া তথ্যমতে শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিকান্দি থেকে সাজেদা মারিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। মারিয়া লাবনীর নতুন প্রেমিক কামরুজ্জামান এর আরেক প্রেমিকা। কামরুজ্জামানকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মূলত মোবাইলে গোপন ভিডিও ও ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।’

উল্লেখ্য, শিবচরের নিলখী ইউনিয়নের চর কামারকান্দি এলাকার সেকান্দার কাজীর ছেলে ইসমাইল হোসেন ইমন। সে ঢাকার একটি কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের তাজপুর এলাকার আলমগীর চৌধুরীর মেয়ে লাবনীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইসমাইল হোসেন তাদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি ও ভিডিও কৌশলে ধারণ করে রাখে। পরে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং লাবনী কামরুজ্জামান কামরুল নামের আরেক ছেলের সাথে ফের প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। প্রাক্তন প্রেমিকের মোবাইলে থাকা অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ভিডিও ডিলিট করতে একাধিক বার সাবেক প্রেমিক ইসমাইলকে অনুরোধ করলেও সে তা না করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ দিতে থাকে লাবনীকে। পরে কৌশলে ডেকে নিয়ে ইসমাইলকে হত্যা করে লাবনী ও তার সহযোগিরা।