• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

কনের চেয়ে ১০ বছরের ছোট বর, ১০০১ টাকা কাবিনে বিয়ে

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

২৬ বছর বয়সী রবিউল ইসলাম। বাবা-মা হারা ছেলেটি ছোটবেলা থেকেই কষ্টের জীবন কাটাচ্ছিলেন। এখন প্রয়োজন একজন জীবনসঙ্গী। কিন্তু মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে সন্ধান মেলে ময়না খাতুনের। তবে মেয়ের চেয়ে ছেলে ১০ বছরের ছোট। বয়সে ছোট-বড় হলেও দুজনরই মিল রয়েছে উচ্চতার। তাই দেরি না করে ধুমধামে তাদের বিয়ে দিয়েছেন গ্রামের লোকজন।

শুক্রবার তাদের বিয়ে হয়। ব্যতিক্রমী এ বিয়েটি হয় যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিস এলাকায়। রবিউল ইসলামের বাবার নাম আকবার আলী। আর ময়না খাতুন একই উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়ে।

বর-কনে ও তাদের অভিভাবকদের সম্মতিতে এদিন দুপুরে এ বিয়ের আয়োজন করেন গ্রামের লোকজন। তিন ফুট উচ্চতার বর-কনের বিয়ের খবরে নবদম্পতিকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন আশপাশের গ্রামের হাজারো লোক। এমন বিয়ের আয়োজনে খুশি নবদম্পতি।

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুজিত বিশ্বাস বলেন, বর রবিউল ইসলামের বয়স ২৬ বছর হলেও তার উচ্চতা তিন ফুট। আর ৩৬ বছর বয়সী কনে ময়না খাতুনের উচ্চতাও তিন ফুট।

 

বিয়ের স্টেজে দম্পতি

বিয়ের স্টেজে দম্পতি

এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিয়ের গেট সাজিয়ে, প্যান্ডেল বানিয়ে ধুমধাম করে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে দুটি মাইক্রোবাসসহ ২০টি মোটরসাইকেলে ৬০ জন বরযাত্রী এসেছিল। মুসলিম শরিয়াহ অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এক হাজার এক টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়।

বরের খালু জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবারে বর রবিউলের জন্ম। ছোটবেলা থেকে তার বাবা-মা কেউ নেই। ছোট্ট থেকে আমরাই রবিউলকে মানুষ করেছি। কৃষিকাজ করেই সে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। রবিউলের বিয়ের বয়স হলেও অনেকদিন ধরে বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে পাশের আন্দুলিয়া গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। জানতে পারি ওই গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়েও কম উচ্চতার। স্থানীয় ব্যক্তিদের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের পরে নতুন বর-বউকে দেখতে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসছে। সেই সঙ্গে তাদের জন্য দোয়াও করছেন তারা।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বর রবিউল বলেন, দুজনের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে। দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এ দম্পতি।

কনে ময়না স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলেন, আমাদের বিয়ে খুব ধুমধামে হয়েছে। অনেক ভালো লাগছে। এভাবে বিয়ে হবে কখনো স্বপ্নও দেখিনি। বিয়েতে আসা দুপক্ষ অনেক আনন্দ করেছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই।

বিয়ের অন্যতম আয়োজক স্থানীয় গাজী কামারুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই সহযোগিতা করে তাদের বিয়ে দিয়েছি। তাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। কম উচ্চতার মানুষকেও সমাজের মূল স্রোতে আনতে এভাবেই এলাকাবাসী ও পরিবার স্বজনদের এগিয়ে আসতে হবে।