• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

‘গোবর-গোমূত্রে করোনা সারার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই’

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১  

করোনা তাড়াতে গোবর ব্যবহারের যে বিশ্বাস মানুষের মধ্যে রয়েছে, তার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, এর কার্যকারিতা নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এতে মহামারি আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। খবর রয়টার্সের।

করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভারতকে। হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন ও ওষুধ পেতে হাহাকার চলছে। চিকিৎসার অভাবে বহু রোগী মারা যাচ্ছেন। সেখানে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ২৬ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন দুই লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জন। তবে অনেকেই বলছেন, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সত্যিকার সংখ্যা পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি হবে।

রোগপ্রতিরোধ বাড়াতে সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও গোবর ও গোমূত্র গায়ে মাখতে গোয়ালে যেতে দেখা যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের। তাদের বিশ্বাস, করোনা থেকে সেরে উঠতে এই পদ্ধতি তাদের সহায়তা করবে।

বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি জাইডুস কাডিলার ভারতীয় প্রধান কার্যালয়ের বরাবর সড়কে অবস্থিত হিন্দু সন্ন্যাসীদের পরিচালিত একটি স্কুল। শ্রী স্বামীনারনায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা নামের ওই প্রতিষ্ঠানে গরুর আশ্রয় কেন্দ্রেও রয়েছে। আর সেখানে দলে দলে মানুষ গোমূত্র ও গোবর নিতে আসছেন।

জাইডুস কাডিলার সহকারী ব্যবস্থাপক গৌতম মনিলাল বরিসা বলেন, আমরা দেখছি মানুষ গায়ে গোবর ও গোমূত্র মাখছে। এমনকি চিকিৎসকরাও অনেকে এই কাজ করছেন। তাদের বিশ্বাস, এই চিকিৎসা তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে, কোনো ভীতি ছাড়াই তারা রোগীদের কাছে যেতে পারবেন।

গরুর আশ্রয় কেন্দ্রে গোবর ও গোমূত্রের মিশ্রণের অপেক্ষায় থাকা লোকজনকে গরুকে বুকে জড়িয়ে সম্মান করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ শক্তি বাড়াতে ইয়োগা চর্চাও করছেন।

এদিকে করোনার বিকল্প চিকিৎসার বিরুদ্ধে বারবার হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরা। তারা বলছেন, এতে নিরাপত্তা ও জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে।

ভারতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ডা. জে এ জয়ালাল বলেন, গোবর কিংবা গোমূত্র করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে— এমন দাবির পক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

তিনি বলেন, এসব পণ্য গায়ে মাখা ও খাওয়ায় বরং স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। পশু থেকে মানব শরীরে অন্যান্য রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এছাড়া দলে দলে মানুষ গোমূত্র ও গোবর নিতে আসায় মহামারি ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। একটি গরু আশ্রয় কেন্দ্রের কর্মকর্তা বলেন, তারা অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা কমিয়ে আনছেন।