• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

নিম্নমান দেখিয়ে উন্নত জাতের খেজুর আমদানি, ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩  

রাজস্ব ফাঁকি দিতে মিথ্যা ঘোষণায় নিম্নমানের দেখিয়ে উন্নত জাতের খেজুর আমদানি করে দেশের বাজারে তা তিন-চারগুণ দামে বিক্রির অপরাধে চট্টগ্রামে তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত নগরীর বিআরটিসি ফলমুন্ডি আড়তে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্তের নেতৃত্বে এ অভিযানে পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আল্লাহর রহমত স্টোরকে ৫০ হাজার টাকা, আলী জেনারেল ট্রেডিংকে ১০ হাজার এবং ফ্রেশ ফ্রুট গ্যালারিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সিনিয়র সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উন্নত মানের খেজুর নিম্নমানের দেখিয়ে একটি এইচএস কোডে আমদানি করেন আমদানিকারকরা। খেজুর আমদানিতে হাতেগোনা কয়েকজন আমদানিকারক রয়েছেন। তারা সিন্ডিকেট করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কমমূল্যে শুল্কায়ন করে খেজুর আমদানি করেন। পরে বেশি দামে এসব খেজুর বাজারে বিক্রি করে থাকেন।

জেলা প্রশাসনের অভিযাানিক টিমের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রায় তিন মাসে দেশে ৪০ হাজার ২৪ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। শুল্কায়নে এগুলোর গড়মূল্য দেখানো হয়েছে প্রতি কেজি ৮৯ টাকা ৩৬ পয়সা। কিন্তু আভিযানিক দল আড়তে গিয়ে পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুর চড়া দামে বিক্রির প্রমাণ পান। এরমধ্যে আজওয়া ৭৫০-১০০০ টাকা, মাবরুক ১২০০-১৩০০ টাকা, মরিয়ম ৫০০-৮০০ টাকা, দাবাস ৪০০-৬০০ টাকা, জাহিদি ২০০-২৫০ টাকা, মেজডুল খেজুর ১২০০-১৩০০ টাকা এবং আলজেরিয়া খেজুর ২৫০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রির তথ্য পাওয়া যায়।

আমদানি তথ্যমতে, ফলমুন্ডি আরতে ১২ জন খেজুর আমদানিকারক রয়েছেন। এরমধ্যে অভিযানে তিন আমদানিকারকের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে আল্লাহর রহমত স্টোর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৩টি এলসির মাধ্যমে দুই হাজার ৫৭২ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি করেছে। এসব খেজুরের গড় আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি ৭০ দশমিক ১৪ টাকা। এর মধ্যে আল্লাহর রহমত স্টোর জাহিদি, নাসার, আল মাদাফ, ফারাহ মধ্যম জাতের খেজুর আমদানি মূল্যের চাইতে তিন-চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই ভাবে আলী জেনারেল ট্রেডিং ১৬৮ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি করেছে প্রতি কেজি ১০৪ টাকা দরে। কিন্তু জাহিদি জাতের খেজুর ২৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রির প্রমাণ মিলেছে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া ফ্রেশ ফ্রুট গ্যালারিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই পাইকারি দোকানটি ঢাকা ভিত্তিক বাংলাদেশের বৃহত্তম খেজুর আমদানিকারক অ্যারাবিয়ান ফ্রুট ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং মদিনা ট্রেডিংয়ের হয়ে চট্টগ্রামে চড়া দামে খেজুর বিক্রি করছিল।

অভিযানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জানিয়েছেন, আমদানির হিসাবে অ্যারাবিয়ান ফ্রুটস ফ্যাক্টরি লিমিটেড মোট ৯২১১ দশমিক ৭৫২ মেট্রিক টন খেজুর প্রতি কেজি ৮৪ দশমিক ৬৪ টাকা দরে আমদানি করেছে। একটি এইচএস কোড দেখিয়ে অ্যারাবিয়ান ফ্রুট ফ্যাক্টরি লিমিটেড ২৫-৩০ জাতের খেজুর আমদানি করেছে। আজওয়া, মেজডুল, মাবরুক, সাফওয়া, মরিয়ম প্রভৃতি উন্নত জাতের খেজুর আমদানি করেও রাজস্ব ফাঁকি দিতে সেগুলো কম দাম দেখিয়ে দেশে প্রবেশ করানো হয়েছে। এরপর এসব খেজুর বাজারে চড়া দামে বিক্রি করা হয়।

জানা যায়, জাত ভেদে খেজুরের দাম পাঁচশত টাকা থেকে হাজার টাকার উপরেও বিক্রি হচ্ছে। মদিনা ট্রেডিংও একই ভাবে খেজুর স্বল্পমূল্যে আমদানি এবং চড়া মূল্যে বিক্রি করছে।

পাইকারি ফল ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম পাইকারি খেজুর ব্যবসায়ী ও কমিশন এজেন্টদের চড়া দামে খেজুর বিক্রি করতে বাধ্য করছেন। তিনি অ্যারাবিয়ান ফ্রুটস ফ্যাক্টরি লিমিটেডের মালিক এবং সাথী ফ্রুটসের স্বত্বাধিকারী। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুর উদ্দিনও রমজান ঘিরে দেশি-বিদেশি ফল চড়া দামে বিক্রি করতে আমদানিকারক ও কমিশন এজেন্টদের মাধ্যমে চক্র গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।