• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

অর্থপাচার নিয়ে সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বিব্রতকর: হাইকোর্ট

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২২  

সুইস ব্যাংকের কাছে অর্থ জমা নিয়ে বাংলাদেশ কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের এমন বক্তব্য সাংঘর্ষিক ও বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। তাই আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে থাকা তথ্য হলফনামা আকারে আদালতে উপস্থাপনের জন্য পরবর্তী দিন রাখলাম। আপনারা প্রতিবেদন হলফনামা আকারের দাখিল করবেন। আগামী ২১ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির আদেশ দেওয়া হবে।

রোববার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে এই আদেশ দেন।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আদালত বলেন, রাষ্ট্রদূত কীভাবে বললেন বাংলাদেশিদের অর্থ জমার বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি- তা আমাদের বোধগম্য নয়।

রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, আপনারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তাতে প্রমাণিত রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সাংঘর্ষিক।

এর আগে রোববার সকালে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন হাইকোর্টে আসে। সেখানে জানানো হয়, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন সময়ে দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউয়ের কাছে চাওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৭ জুন এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা।

অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ অন্যান্য দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপী এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব (ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউ’র সদস্য হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ।

ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর ওই একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরদিন ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে অনুরোধ জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পায়নি বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে সর্বশেষ গত ১৭ জুন চিঠি দেয় বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুদক এবং রাষ্ট্রপক্ষের কাছে পদক্ষেপ জানতে চান। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এসব বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিল দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের রেফারেন্স টেনে ওইদিন (১১ আগস্ট) আদালত জানতে চান কী পরিমাণ অর্থ সুইচ ব্যাংকে পাচার হয়েছে? এ বিষয়ে সরকার ও দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে? তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ বা দুদক কোনো তথ্য দিতে পারেনি আদালতকে। তাই রোববারের মধ্যে এ বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে ১০ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার বিষয়ে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি বলে জানান ঢাকায় নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।