• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

‘অভিনব শর্তে’ কারামুক্ত রানু

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২১  

যশোরে অভিনব শর্তে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন রানু বেগম নামের এক নারী। মাদক মামলায় দুই বছরের সাজা প্রদান করে ১১ জন নিরক্ষর নারীকে অক্ষর জ্ঞান প্রদানসহ ৯ শর্তে তাকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এ রায় দেন। রায়ে আদালতের শর্তগুলো পালনে নজরদারি রাখতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আদালতের অতিরিক্ত সরকারী কৌঁসুলি লতিফা ইয়াসমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাজাপ্রাপ্ত রানু বেগম যশোরের অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা রেলবস্তি এলাকার আব্দুল মতিন হাওলাদারের স্ত্রী।

বাড়িতে থেকে সাজা ভোগের অন্য শর্তগুলো হলো-

প্রবেশনকালীন বাড়িতে বসে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ও মক্তিযুদ্ধে নারী অবদানের বিষয় ধারণ ও সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পাঁচটি বই পড়তে হবে। বইগুলো হলো- জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, নীলিমা ইব্রাহিমের আমি বীরঙ্গনা, মালেকা বেগমের মুক্তিযুদ্ধে নারী, মুহম্মদ জাফর ইকবলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও আনিসুল হকের ‘মা’।

নিজ এলাকায় বাল্য বিবাহের সংবাদ পেলেই তাৎক্ষণিক ৩৩৩ কিংবা ৯৯৯ এ কল করে সংশ্লিষ্ট থানাকে জানাতে হবে।

এছাড়া কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সকলের সঙ্গে সদাচারণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোনো প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। আদালতকে না জানিয়ে দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ৯ আগস্ট হেরোইন বিক্রিকালে অভয়নগর থানা পুলিশের সদস্যরা নওয়াপাড়া মডেল স্কুলের সামনে থেকে রানু বেগমকে আটক করা হয়। এ সময় তার স্বীকারোক্তিতে ওড়নায় বাঁধা অবস্থায় ছয় পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এরপর অভয়নগর থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসআই মঞ্জুয়ার রহমান মামলার তদন্ত শেষে রানু বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারী কৌঁসুলি লতিফা ইয়াসমিন জানান, এটাই তার প্রথম অপরাধ। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়েও দীর্ঘ ১৩ বছর বিচার চলাকালে রানু আদালতে হাজিরা দিতে ভুল করেনি। তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো মামলাও নেই। এছাড়া তিনি গুরুতর অসুস্থ। সব বিবেচনায় বিচারক তাকে দুই বছরের সাজা দিলেও প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন।