• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণে ওষুধশিল্পে জোর বিশেষজ্ঞদের

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০২২  

স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় ওষুধশিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্যাটেন্ট আইন ২০২২ এর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা প্রয়োজন। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণে ওষুধশিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।

বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেছেন। একইসঙ্গে এ সংশোধন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি খাত নিবিড়ভাবে আলোচনার মাধ্যমে যৌথভাবে কাজ করার ওপর তারা গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাপোর্ট টু সাস্টেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্প (এসএসজিপি) ও বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ‘প্রিপারেডনেস অব ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর ফর এলডিসি গ্রাজুয়েশন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিল্ডের চেয়ারপারসন নিহাদ কবির এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রাহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রভূত অগ্রগতি সাধন করেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের ওষুধ জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতাধীন চুক্তির আওতায় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত বিশেষ সুবিধা প্যাটেন্ট ওয়েভারের অগ্রগতি অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে স্থানীয় ওষুধশিল্পের এ অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করার সুযোগ রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রেক্ষাপটে পরিবর্তিত পরিস্থিতে ঔষধশিল্পের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে একটি কার্যকরী রোডম্যাপ প্রস্তুত করে তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি বলে বক্তারা জানান।

স্থানীয় ওষুধশিল্পের ওপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব নিরসনকল্পে এরইমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটি সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিক বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণ করতে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।

সেমিনারে সালমান এফ রহমান উত্তরণ পরবর্তী সময়ে স্থানীয় ওষুধশিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে প্যাটেন্ট আইন সংশোধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পরও যেন চুক্তির আওতায় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত বিশেষ সুবিধাসমূহ অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি অবিলম্বে ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট শিল্প পার্কের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার ওপর জোর দেন। ওষুধশিল্পে ভবিষ্যতে আরও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে এবং এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ শিল্পের আরও উন্নয়ন সম্ভব বলে তিনি মতামত দেন। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা ওষুধপণ্যের প্যাটেন্টের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মেইল বক্সের ব্যবস্থাটি পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তিনি বিলোপের আহ্বান জানান।

শরিফা খান উত্তরণ পরবর্তী সময়ের জন্য ওষুধশিল্পকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি খাত এবং শিল্পখাতের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি শক্তিশালী অংশিদারিত্বমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন ।

জাকিয়া সুলতানা বলেন, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাত বিশেষত ওষুধশিল্পের সঙ্গে নিবিড় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই প্যাটেন্ট আইন সংশোধন করা হবে।

বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান বাংলাদেশের প্যাটেন্ট আইনে প্যাটেন্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান।

নিহাদ কবির মেধাসত্ত্ব সংক্রান্ত কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এ বিষয়ক প্রয়োজনীয় আইনি সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রাহমান বলেন, জৈবপ্রযুক্তিগত গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে দেশে বায়োটেক পার্ক ও জেনোম ভ্যালি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। তিনি ওষুধশিল্পে পোশাকখাতের ন্যায় প্রণোদনা দেওয়ার ওপর জোর দেন।