• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

নিলামেও বিক্রি হয়নি বন্দরের গাড়ি

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১  

এবারও বিক্রি হলো না চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে পড়ে থাকা ১১২টি মূল্যবান গাড়ি। নিলামে ৬০ শতাংশ দাম উঠেছে মাত্র ৩টি গাড়ির। পৌনে চার কোটি টাকার বিএমডব্লিউর দাম চাওয়া হয়েছে ১২ লাখ টাকা। সোয়া এক কোটি টাকার মার্সিডিজ বেঞ্জ চাওয়া হয়েছে ৩ লাখ টাকা। তবে শত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় নিশ্চিতে নিলাম আইন সংশোধন করে গাড়িগুলো বিক্রি করে দেওয়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা। কিন্তু নিলামে দাম উঠেছে মাত্র ১২ লাখ টাকা। একইভাবে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের রেঞ্জ রোভার কেনার জন্য দর হাঁকা হয়েছে মাত্র ১৮ লাখ টাকা। একইভাবে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের মার্সিডিজ বেঞ্জের দাম চাওয়া হয়েছে মাত্র ৩ লাখ টাকা।

২০১১ সাল থেকে গত ১০ বছরে ৫ বারের বেশি নিলাম ডাকা হয়েছে এসব মূল্যবান গাড়ি বিক্রির জন্য। কিন্তু নানা জটিলতায় কোনোবারই গাড়িগুলো বিক্রি করা যায়নি। আর দীর্ঘদিন ধরে শেডে এবং কন্টেইনারে পড়ে থাকায় গাড়িগুলো পরিত্যক্ত পর্যায়ে চলে যাওয়ায় সরকার শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় গাড়িগুলো দ্রুত বিক্রির জন্য নিলাম আইন সংশোধনের কথা বলছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।

 এ ব্যাপারে বারভিডার সাবেক কোষাধ্যক্ষ জুনায়েদ মোহাম্মদ হেলাল বলেন, ১০-১২ বছর ধরে গাড়িগুলো পড়ে আছে। দিনকে দিন অযত্নে অবহেলায় গাড়িগুলোর অবস্থাও এখন নাজুক। এ জন্য বেশি দাম হাঁকাতে বিডারদের আগ্রহ সৃষ্টি হয় না। এ ছাড়াও গাড়িগুলো ফেলে রাখায় ধীরে ধীরে এর বডি এবং ইঞ্জিনের ফিজিক্যাল ফিটনেস হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানান সাবেক এই কোষাধ্যক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ নিলাম ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, "গাড়িগুলো দামি হলেও বর্তমান বাজারমূল্যে এই গাড়ির চাহিদা অনেক কম। আমি যদি বেশি টাকা দিয়ে বিড করে থাকি তাহলে দেখা যাবে আমাকেই লোকসানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।"

তিনি আরও বলেন, "যারা এখানে গাড়ি বিড করতে আসে তারা মূলত ব্যবহারের জন্য গাড়ি বিড করতে আসে না। বেশির ভাগ সময়ে দেখা যায় ক্রেতারা এই ধরনের আগের মডেলের গাড়ি কিনে নিজের নতুন গাড়িতে তার পার্টস সংযোজন করে।"

তবে গত ৩ এবং ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নিলামে ৬০ শতাংশ দর দেওয়া ৩টির পাশাপাশি গত নিলামের চেয়ে বেশি দাম দেওয়া ১১টি গাড়িও বিক্রির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাকি গাড়িগুলো বিক্রির জন্য আবারো নিলাম ডাকতে হবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপকমিশনার মো. আল আমিন বলেন, "এবারের নিলামে গাড়ির সর্বোচ্চ দর পড়েছে ৫৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া অনেক গাড়িরই দাম হাঁকানো হয়েছে ৪০ লাখ টাকা থেকে ৩৫ লাখ টাকা। এখনই আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। পূর্ববর্তী মূল্য এবং বর্তমান মূল্য পর্যবেক্ষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।"

গত ১৫ থেকে ২০ বছর আগে পর্যটন সুবিধায় মূল্যবান এসব গাড়ি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কার্নেট সুবিধা সংক্রান্ত গাড়ি ছাড় করার ক্ষেত্রে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করায় গাড়িগুলো এত দিন ধরে বন্দরেই পড়ে আছে। নিলামে তোলা ১১২টি গাড়ির ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। নিলামে বিক্রির তালিকায় রয়েছে মিতশুবিশি, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, ল্যান্ডরোভার, ল্যান্ড ক্রুজার,লেক্সাস, ফোর্ড, জাগুয়ার,দাইয়ু, হোন্ডা ও সিআরভি।