• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

দেশেই তৈরি হচ্ছে ফাইভ-জি ফোন

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২০  

এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের ফোন তথা ফাইভ-জি ফোন। স্যামসাংয়ের তৈরি এই ফাইভ-জি ফোন দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে উৎপাদকদের। এরই মধ্যে বাজার খোঁজা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। স্যামসাংয়ের মূল প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন পেলে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন এ দেশীয় উৎপাদকরা।

দেশে স্যামসাং মোবাইলের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ফেয়ার গ্রুপের সূত্রে জানা গেছে, ফাইভ-জি ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট-২০ ও নোট-২০ আল্ট্রা বাজারে ছাড়ার পরপরই স্মার্টফোনপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়। প্রি-বুকিংয়েই প্রায় শেষ হয়ে যায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ফোন। দাম বেশি হলেও ক্রেতাদের আগ্রহের কোনও কমতি ছিল না বলে জানিয়েছে ফেয়ার গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি চার হাজার ইউনিট ফাইভ-জি ফোন বাজারে ছাড়ে।

দেশে তৈরি ফাইভ-জি ফোনের বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের দেশেই এখন তৈরি হচ্ছে ফাইভ-জি মোবাইল ফোন। বিষয়টি আমাদের জন্য আনন্দের। আমরা জানতে পেরেছি, ফাইভ-জি ফোন নির্মাতারা এটি রফতানি করবে। আমরা আমদানিকারকের দেশ থেকে উৎপাদকের দেশ হয়েছি। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারে আমরা রফতানিকারকের দেশ হয়েছি। এবার মোবাইল ফোনেও আমরা রফতানিকারকের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবো। ওয়ালটন শুরু করেছে। অন্যরাও ধীরে ধীরে শুরু করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, দেশের মোট চাহিদার মোবাইল ফোনের ৮২ শতাংশ এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। খুব অল্প সংখ্যক ফোন আমরা এখন আমদানি করছি। একটা সময় সেটাও আর করতে হবে না। দেশে তৈরি ফোন দিয়েই আমরা চাহিদা মেটাতে পারবো।’

প্রসঙ্গত, দেশে স্যামসাং, ভিভো, ওয়ালটন, অপো, সিম্ফনি, আইটেল, টেকনো, ফাইভস্টার, উইনস্টার,লাভা ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মোবাইল তৈরি হচ্ছে। দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান ‘উই’ নামের একটি ফোন তৈরি করলেও পরে তারা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো শুরুতে ‘লো-এন্ড’ এর স্মার্টফোন তৈরি করলেও ধীরে ধীরে ‘হাই-এন্ড’ সেট তৈরি করছে। দেশে মোবাইল তৈরির কারখানা এখন ৯টি। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ওয়ালটন এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রফতানি করেছে। সিম্ফনি শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামে ব্যবসা বাড়ানোর কথা ভাবছে। ২০২২ সালে সিম্ফনি স্মার্টফোন রফতানি করতে চায়। স্যামসাং ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্য, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় এ দেশে তৈরি ফোন রফতানি করতে আগ্রহী।

স্যামসাং মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কয়েকটি জায়গায় স্মার্টফোন রফতানির জন্য চেষ্টা করছি। স্যামসাংয়ের অনুমোদন পেলে বিষয়টি সহজ হবে।’ সরাসরি ফ্লাইট যায় এমন দেশকেই রফতানির তালিকায় এগিয়ে রাখতে চান মেসবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ভারতের সেভেন সিস্টার অঞ্চল ও নেপালে রফতানির অনুমোদন চেয়েছি। অনুমোদন পেলে এসব জায়গায় বিমান প্রয়োজন হবে না, গাড়িতে করেও আমরা স্মার্টফোন নিয়ে যেতে পারবো।’

মেসবাহ উদ্দিন জানান, স্যামসাংয়ের যেসব ফোন এখন বাজারে পাওয়া যায়, তার ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ ফোন এ দেশে তৈরি। যে ০.১ শতাংশ বাকি থাকে তা আমরা আমদানি করি। যেমন স্যামসাং ফোল্ড সিরিজের ফোন আমরা আমদানি করি। শিগগিরই ফোল্ড-২ সিরিজের ফোন বাজারে আসবে, যা কোরিয়ায় তৈরি।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দীর্ঘদিন বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে গ্রে মার্কেটে (লাগেজে বা অন্য উপায়ে দেশে মোবাইল প্রবেশ) পণ্য কম থাকায় অফিসিয়াল মোবাইলের বিক্রি বেড়েছে। এ কারণে দেশে তৈরি স্যামসাংয়ের এক থেকে দেড় লাখ টাকা দামের ফোনও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বলেন, ‘দেশের মোবাইল কারখানাগুলোতে প্রতিমাসে ১৬-১৭ লাখ ইউনিট মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে।’ প্রায় শতভাগ স্মার্টফোন এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান। যদিও তৈরি ফিচার ফোনের সংখ্যা স্মার্টফোনের চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘গ্রে মার্কেট আগের চেয়ে অনেক ছোট হয়েছে। ফিচার ফোন এনে গ্রে মার্কেটওয়ালদের মার্জিন (মুনাফা) তেমন থাকছে না। ফলে এই মার্কেট ছোট হয়ে যাওয়ায় অফিসিয়াল ফোনের বিক্রি অনেক বেড়েছে।’

এসবের বাইরে বড় তিনটি ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে হুয়াওয়ে, শাওমি ও নকিয়া, যাদের এ দেশে মোবাইল কারখানা নেই। এরমধ্যে শাওমির অবস্থান শীর্ষে বলে জানা গেছে। করোনাকালে সাপ্লাইচেনের মধ্যে সমস্যা হওয়ায় বাজার চাহিদা অনুয়ায়ী কোনও প্রতিষ্ঠানই পণ্য আনতে পারেনি। বৈশ্বিক এ সমস্যা স্বাভাবিক হতে থাকলে মোবাইলের সরবরাহ বাড়তে থাকবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ২-৩ মাস লকডাউনের ফলে ডিজিটাল ডিভাইসের চাহিদা বেড়েছে। সে হিসেবে বর্তমানে মোবাইলের বাজার (বিক্রি) দ্বিগুণ হয়েছে।